:::: সবাইকে বাংলা নববর্ষের (1422) শুভেচ্ছা ::::
বাংলা সন আমাদের জাতীয় জীবনে যেন উৎসবে পরিণত হয়েছে। আমরা যে এত আনন্দ ও উৎসবের মধ্য দিয়ে এ দিনটি উদযাপন করি, কিন্তু এ দিনটি বা বাংলা সন আমাদের মাঝে কিভাবে এলো তা কি আমরা জানি? অনেকে হয়তো জানেন আবার অনেকে জানেন না। যারা জানেন না তাদের উদেশ্যে এ লেখা।
১৫৫৬ সালের বাদশা আকবর সিংহাসনে আরোহণ করেন। তখন আমীর ফতেহ উল্লাহ সিরাজী হিজরী সনকে সৌর সনে পরিবর্তন করে বাংলা সনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সেই থেকে বাংলা সনের সূচনা। ১৫৫৬ সালে সম্রাট আকবরের শাসনামলে ভারত বর্ষ ভারতসন, লক্ষণসন, শকাব্দসন, বিক্রমসন, জালালীসন, সেকান্দরসন, গুপ্তাব্দসন প্রচলিত ছিল। তখন এগুলো চন্দ্ররীতিতে গণনা করা হতো। যার ফলে সৌর বছরের সাথে এসব সালের গোলমাল হয়ে যেত প্রতি বছর। চন্দ্র উদয়ের সাথে হিসেব করে চন্দ্র সনের মাস গণনা করা হয়ে থাকে। প্রতি চন্দ্র মাসের ২৯/৩০ দিনে চাঁদ উদয় হলে নতুন মাস শুরু হত। এভাবে প্রতি বছর অন্তর অন্তর চন্দ্রবর্ষে একমাস অতিরিক্ত যোগ করে সৌর বর্ষের সঙ্গে মিলিয়ে নেয়া হতো। আর এই অতিরিক্ত মাসটিকে জ্যোতিষিরা বলতো ‘মিল মাস’।
এই অদ্ভুত হিসেবের ফলে প্রজা সাধারণ অসুবিধায় পড়তো। তখন এ অসুবিধা দূর করার জন্যই আমীর ফতেহ উল্লাহ সিরাজী হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে বাংলা বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন ও চৈত্র মাস সৌর মাসে রূপান্তরিত করেন। আমীর ফতেহ উল্লাহ সিরাজী কর্তৃক বাংলা সন প্রবর্তনের ফলে বাংলা সনের তারিখ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। তখন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমী ও ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহসহ আরো অনেক মনীষী, পন্ডিতের প্রচেষ্টায় এ ফল হিসেবে বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৮ সালে তা সরকারিভাবে কার্যকর করে।
আর বর্তমানে সরকারি নির্দেশ মোতাবেক বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানাদির তারিখ নির্ধারণে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা সন ও তারিখ ব্যবহার করা হচ্ছেl
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন